ডেস্ক রিপোর্টার :

পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীর আচরণগত বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে শিক্ষণীয় উপমা উপস্থাপন করা হয়েছে। এমনই এক আলোচিত আয়াতে, ইহুদি জাতির একাংশকে গাধার সঙ্গে তুলনা করেছেন আল্লাহ তায়ালা। এটি এসেছে সূরা জুমুআর পঞ্চম আয়াতে।

আয়াতে বলা হয়েছে—

“যাদের তাওরাত দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তারা তা যথাযথভাবে বহন করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত হলো পুস্তক বহনকারী গাধার মতো। কত নিকৃষ্ট ওই সম্প্রদায়, যারা আল্লাহর নিদর্শন অস্বীকার করে।” (সূরা জুমুআ, আয়াত: ৫)

এই আয়াতের রয়েছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা—একটি সাধারণ, অপরটি বিশেষ।

সাধারণ ব্যাখ্যা অনুযায়ী,

যারা তাওরাত পেয়েছিল তারা এ মহাগ্রন্থের জ্ঞান ধারণ করলেও তার বিধান অনুযায়ী আমল করেনি। আল্লাহ তাদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন তাওরাত অনুসারে চলা এবং জাতিকে পথ দেখানোর, কিন্তু তারা সে দায়িত্ব থেকে বিমুখ হয়ে পড়েছিল। এর ফলে তারা জ্ঞানে সমৃদ্ধ হলেও বাস্তব জীবনে ছিল বিভ্রান্ত ও দিশাহীন।

বিশেষ ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে,

তাওরাতের অনুসারী হওয়ার কারণে এ জাতির ওপর দায়িত্ব ছিল শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে চেনা ও সাহায্য করার। কারণ, তাওরাতে তাঁর আগমনের সুসংবাদ ছিল সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত। কিন্তু তারা তাওরাতের সেই আলোকে চলা তো দূরের কথা, বরং নবী করিম (সা.)-এর সবচেয়ে বড় বিরোধিতাকারী হয়ে দাঁড়ায়।

এই তুলনার মাধ্যমে ইসলামী পরিভাষায় একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে—

শুধু জ্ঞান ধারণ করলেই চলবে না, বরং সেই জ্ঞানের ভিত্তিতে আমল করাই মূল কথা। গাধা যেমন ভার বহন করে কিন্তু তার কোনো অর্থ বোঝে না, তেমনি যারা ধর্মীয় জ্ঞান রাখে কিন্তু সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে না, তারা সেই জ্ঞানের প্রকৃত উপকার থেকে বঞ্চিত থাকে।

এ আয়াতের মর্মে আছে বর্তমান যুগের মুসলিমদের জন্যও স্পষ্ট শিক্ষা। শুধু কোরআন মুখস্থ বা তিলাওয়াত করলেই যথেষ্ট নয়, বরং এর নির্দেশনা অনুসারে জীবন গড়াই একজন মুসলিমের প্রকৃত কর্তব্য।