ডেস্ক রিপোর্টার :

আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, অনিশ্চয়তা ও প্রতিযোগিতার ভিড়ে মানুষ আজ বেশি মানসিক চাপে ভোগে। হতাশা, দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতা থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় খুঁজে বেড়ায় অনেকে। ইসলাম এ বিষয়ে দিয়েছে সহজ ও কার্যকর পথনির্দেশনা—ইস্তিগফার এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়ার মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি অর্জন।

আলেমদের মতে, শয়তানের প্রথম অস্ত্রই হচ্ছে দুশ্চিন্তা। কারণ এটির মাধ্যমে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অনেক সময় ভুল পথে পা বাড়ায়। অথচ আল্লাহ তায়ালা বারবার কোরআনে মানুষকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

ইস্তিগফার—শান্তির চাবিকাঠি

সর্বাধিক কার্যকর দোয়া হিসেবে ‘ইস্তিগফার’ বা ক্ষমা প্রার্থনাকে বর্ণনা করেছেন নবী করিম (সা.)। তিনি বলেন,

“যে ব্যক্তি নিজের জন্য ইস্তিগফারকে অভ্যাসে পরিণত করবে, আল্লাহ তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন, সংকট থেকে উদ্ধার করবেন এবং অপ্রত্যাশিতভাবে জীবিকার দরজা খুলে দেবেন।” (সুনানে নাসায়ি ৩৮১৯)

মাত্র একটি শব্দ—আস্তাগফিরুল্লাহ। হাঁটতে, চলতে, কাজ করতে, যে কোনো সময় এটি পড়া যায়। এতে দুশ্চিন্তা দূর হয় এবং আল্লাহর রহমতও লাভ হয়।

পেরেশানি থেকে মুক্তির দোয়া:

اللَّهُ، اللَّهُ رَبِّى لاَ أُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا

উচ্চারণ: আল্লা-হু, আল্লা-হু রাব্বী, লা-উশরিকু বিহি শাইআন।

অর্থ: আল্লাহ, আল্লাহ, তিনিই আমার রব, আমি তার সাথে কাউকে শরিক করি না।

এই দোয়া বারবার পাঠ করলে অন্তরে প্রশান্তি আসে এবং ভরসার অনুভব জাগে।

হতাশা থেকে মুক্তির দোয়া:

لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظّالِمِينَ

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনায-যালিমীন।

অর্থ: আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আপনি পবিত্র, নিশ্চয় আমি যালেমদের অন্তর্ভুক্ত।

এই দোয়াটি ছিল নবী ইউনুস (আ.)-এর দোয়া, যা তিনি মাছের পেটে বিপদের সময় পড়েছিলেন। এটি হতাশা ও কষ্ট থেকে মুক্তির অন্যতম দোয়া হিসেবে বিবেচিত।

মানসিক চাপের যুগে ইসলামিক সমাধান

মানসিক প্রশান্তির জন্য কেবল চিকিৎসা নয়, আত্মিক শান্তি ও আস্থা অর্জনেও প্রয়োজন ধার্মিকতা ও আল্লাহর স্মরণ। প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে মাত্র কয়েক মিনিট দোয়ার অভ্যাস গড়ে তুললেই বদলে যেতে পারে পুরো মানসিক অবস্থা।