ওয়ানডের সূর্য ডুবিয়ে বছর শেষ
প্রথম দুই ম্যাচ শেষে মেহেদী হাসান মিরাজ বলেছিলেন, ওয়ার্নার পার্ক তিনশ গ্লাস রানের উইকেট। ওই পরিমাণ রান করতে না পারায় হেরে গেছেন, বোঝাতে চেয়েছিলেন অধিনায়ক। অথচ শেষ ম্যাচে ৩২১ রান করেও হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেছেন চার উইকেটে। বাংলাদেশের চার-চারটি ফিফটি ক্যারিবীয় সাগরের লোনা জলে ডুবিয়ে বিজয় উদযাপন করেছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সেন্ট কিটসের পড়ন্ত বিকেলের সোনালি রোদে হেলেদুলে আমির জঙ্গুদের নান্দনিক উদযাপন যেমন চোখে লেগে থাকার মতো, তেমনি সমর্থক হৃদয়ে মোচড় দেওয়ার মতো দৃশ্য মাহমুদউল্লাহদের নতশিরে মাঠ ছাড়া। কারণ বিরোচিত জয়ে টেস্ট সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র করার পর ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হওয়া দলীয় পারফরম্যান্সের পতনের চিত্র। অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজে এমন হওয়ার কথা না। কারণ ২০১৮ সাল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সব কন্ডিশনে টানা ১১টি ওয়ানডে ম্যাচজয়ী ছিল বাংলাদেশ।
২০২৩ সালের বিশ্বকাপ থেকে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ভালো খেলছে না বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন, সাকিব আল হাসান খেলতে পারছেন না। মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয় চোটের কারণে না থাকায় বাংলাদেশ এখন নড়বড়ে ওয়ানডে দল। পেস বোলিংয়ের উত্থান হলেও স্পিন বোলিং ভালো করতে পারছে না। মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন বিদেশের মাটিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে ভালো করছিলেন না। ভালো মানের বাঁহাতি স্পিনারের শূন্যতা সমন্বিত বোলিং পারফরম্যান্সে বড় ধাক্কা। আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে কিছুটা লড়াই করতে পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজে মুখ থুবড়ে পড়েছে। সাকিব থাকলে বোলিং বিভাগে আরও ভারসাম্য থাকত। বাংলাদেশ দলের শক্তির জায়গা মাথায় রেখে সেন্ট কিটসে উইকেট গড়েছিল স্বাগতিকরা।
পেসবান্ধব উইকেটে খেলে অভ্যস্ত ক্যারিবীয় দল ব্যাটিংবান্ধব কন্ডিশন বেছে নেয় সফরকারীদের পরাজিত করার কৌশল হিসেবে। ফাস্ট বোলিং উইকেট হলে নাহিদ রানারা বারুদ বোলিং করে শাই হোপদের কুপোকাত করার সম্ভাবনা বেশি থাকত। কারণ তারা জানে তাদের ফাস্ট বোলিং ইউনিটের চেয়েও বাংলাদেশ পেস বোলিংয়ে শক্তিশালী। তাই বাংলাদেশের দুর্বলতার জায়গা ব্যাটিংয়ে আঘাত করতে চেয়েছিলেন তারা। উইকেটে টিকে থেকে বড় ইনিংস খেলা ও জুটি গড়ায় বাংলাদেশের এই দলের চেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা বেশি দক্ষ।
৩২২ রানের জবাবে ২৫ বল হাতে রেখে ৩২৫ রান করে তুলে চার উইকেটে ম্যাচ জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দেখিয়েছে ব্যাটিংবান্ধব উইকেটেও ভালো খেলে তারা। হোয়াইটওয়াশ হয়ে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, “আমাদের বোলারদের জন্য খুব কঠিন দিন ছিল। ব্যাটাররা ভালো করেছে। আমরা ভালো জুটি পেয়েছি। সৌম্য, জাকের ও মাহমুদউল্লাহ— সবাই ভালো করেছে। বোলিংয়ে আরও ভালো করার সুযোগ ছিল। মাঝের ওভারে উইকেট নিতে পারিনি। এটি আমাদের জন্য সমস্যার ছিল।'
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার শেষ করল বাংলাদেশ। নিজেদের পছন্দের সংস্করণেও এ বছর ভালো করতে পারেনি। ৯ ম্যাচ খেলে জিতেছে তিনটিতে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল মার্চে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাওয়ার আগে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে আফগানিস্তানের কাছে। বছরের শেষ সিরিজে হোয়াইটওয়াশের ক্ষত দগদগে। এই সমীকরণ নিয়েই ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলবে বাংলাদেশ। মিরাজ বলছিলেন, ‘আমাদের সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। আমরা জানি, আমাদের কোথায় উন্নতি প্রয়োজন। আশা করি, এগিয়ে যাওয়ার পথে আমরা বুঝতে পারব কীভাবে সেসব জায়গায় উন্নতি করতে হবে।”
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News