ডেস্ক রিপোর্টার :

ফ্যাশন নিয়ে বিতর্ক—নাম নিলে প্রথমেই আসে উরফি জাভেদ। কখনো টেপ, কখনো রশি, কখনো সেফটিপিন, আবার কখনো পুরো শরীর ঢাকাই না—পোশাক বাছাইয়ে তিনি যেন এক নিজস্ব বিপ্লবের নাম। তবে এই 'বিতর্কের রানি'র অতীত কিন্তু এর একেবারেই বিপরীত। এক সময় ঘোর রক্ষণশীল পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন এই মডেল—খুব কড়া শাসনের ভেতর দিয়ে কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর।

সম্প্রতি একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানে দেওয়া খোলামেলা স্বীকারোক্তিতে উরফি জানিয়েছেন, তিনি পাঞ্জাবের একটি কড়া নিয়মনীতির পরিবারে বড় হয়েছেন। তার ভাষায়, ‘আমার পোশাকের ওপর ছিল পরিবার ও বাবার কঠোর নিয়ন্ত্রণ। গলায় গলা পর্যন্ত ঢেকে থাকা পোশাক পরতে হতো, ওড়না ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই উঠত না।’

উরফি আরও বলেন, ‘ওড়না একটু সরলেও বাবার হাতে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হতে হতো। সে সময়টায় আমি বুঝে গিয়েছিলাম, আমার নিজের শরীর, আমার নিজের স্বাধীনতা কেউ কেড়ে নিতে পারে না—এই ভাবনা তখনই মনে গেঁথে যায়।’

এই নিয়ন্ত্রণ আর নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে আজকের উরফি দাঁড়িয়েছেন একধরনের ‘প্রতিবাদী পোশাক’-এর দর্শনে। পডকাস্টে তিনি সোজাসাপ্টা বলেন, ‘আমি অন্তর্বাস পরতে পছন্দ করি না। এতে নিজেকে আবদ্ধ মনে হয়। আমি চাই মন ও শরীর—উভয় দিক থেকেই স্বাধীনভাবে বাঁচতে।’

এই খোলামেলা বক্তব্য নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

উরফির এমন স্পষ্ট ও সাহসী বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, তেমনি সমালোচনার ঢলও বইছে। কেউ তাকে ‘স্বাধীনচেতা নারীর প্রতীক’ বলছেন, কেউ আবার তাকে কটাক্ষ করছেন ‘সস্তা লাইমলাইট খোঁজার পথ’ হিসেবে।

তবে উরফির দৃষ্টিতে, তার ফ্যাশন হচ্ছে আত্মপ্রকাশের মাধ্যম—কাউকে চমকে দেওয়ার জন্য নয়, বরং নিজের জন্য। তার ভাষায়, ‘আমার শরীর আমি যেমনভাবে উপস্থাপন করতে চাই, সেটাই আমার অধিকারের অংশ। আমি কারও চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করব না।’

সামাজিক বাস্তবতা ও বিতর্ক

উরফির এমন অবস্থান আমাদের সমাজে নারীর পোশাক নিয়ে প্রচলিত দ্বিচারিতা ও বিধিনিষেধকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। যদিও এই বিতর্ক থামার নয়, তবে উরফির মত সাহসী স্বীকারোক্তি হয়তো অনেকেই চিন্তা করার সুযোগ করে দিচ্ছে—নারীর শরীর তার নিজের, সমাজের নয়।