ডেস্ক রিপোর্টার :

ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে ঘটে গেল এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। এয়ার ইন্ডিয়ার একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ১৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে বিমানটি। গন্তব্য ছিল যুক্তরাজ্যের লন্ডন। কিন্তু উড্ডয়নের কিছু সময় পরই বোয়িং ৭৮৭-৮ কুইকজেট মডেলের বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সরাসরি বিধ্বস্ত হয় একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে।

বিমানটিতে মোট ২৪২ আরোহী ছিলেন, এর মধ্যে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন।

ক্যামেরায় ধরা পড়ে বিধ্বস্তের সেই বিভীষিকাময় দৃশ্য। বিমানটিতে আগুন ধরে যায়, চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ঘন কালো ধোঁয়া। আতঙ্কিত মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকেন। পুরো এলাকাজুড়ে তৈরি হয় বিশৃঙ্খল ও হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি।

সবচেয়ে ভয়াবহ দিকটি হলো, বিমানটি সরাসরি আছড়ে পড়ে একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে, যেখানে চিকিৎসাশাস্ত্রের ছাত্রছাত্রীরা থাকতেন। এর ফলে বহু শিক্ষার্থীর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে একাধিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, তবে সরকারিভাবে এখনও স্পষ্ট সংখ্যা জানানো হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে এক মর্মান্তিক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন এবং জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ) উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গান্ধীনগর ও ভাদোদরা থেকে মোট ৬টি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে কাজ করছে।

একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন,

"এটি আহমেদাবাদের ইতিহাসে একটি ভয়াবহ দিন। আমরা বহু তরুণ প্রাণ হারিয়েছি। এটি অপূরণীয় ক্ষতি।"

এদিকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

বিধ্বস্ত হওয়া ফ্লাইটের যাত্রী তালিকায় গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানির নামও রয়েছে। তবে তিনি বিমানে উঠেছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোক জানাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।