কাউন্সিলের মাধ্যমে হবে সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। বিচারক নিয়োগ হবে স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
পরে সন্ধ্যায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। প্রসঙ্গত, গত ১৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
আসিফ নজরুল জানান, সুপ্রিম কোর্টের পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় এবং স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের বিষয়ে তিনি বলেন, এতে বিচারক নিয়োগে একটি কাউন্সিলের বিধান করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের দুজন বিচারক (একজন কর্মরত ও একজন অবসরপ্রাপ্ত), হাইকোর্টের দুজন বিচারক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়ে ছয় সদস্যের এই কাউন্সিল গঠন করা হবে।
নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এই কাউন্সিল নিজ উদ্যোগে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করবে। একই সঙ্গে বিচারক হবার যোগ্য যেকোনো ব্যক্তি নিজের ইচ্ছায় আবেদন বা কারও নাম প্রস্তাব করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা থাকবে। কাউন্সিল প্রাথমিক যাচাই- বাছাইয়ের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবে এবং এই কাউন্সিলের নাম হবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল। আইন ও বিচার উপদেষ্টা হাইকোর্টে বিচারক পদে পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া এই কাউন্সিলের মাধ্যমে হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইন ও বিচার উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে যে অনাচার, চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হতো, মানুষকে যে দমন- নিপীড়ন করা হতো, তার একটি বড় প্ল্যাটফর্ম ছিল উচ্চ আদালত। সেখানে মানুষ প্রতিকার পেত না। এর কারণ ছিল রাজনৈতিক সরকারগুলো উচ্চ আদালতে সম্পূর্ণভাবে দলীয় বিবেচনায়, অনেক ক্ষেত্রে অদক্ষ লোকদের বিচারক নিয়োগ দিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চ আদালতে যদি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিরা বিচারক হিসেবে নিয়োগ না পান, তাহলে দেশের ১৭ কোটি মানুষের মানবাধিকারের প্রশ্নটি অমীমাংসিত ও ঝুঁকির মধ্যে থেকে যায়।’
আশা প্রকাশ করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞ, দক্ষ ও দলনিরপেক্ষ এবং প্রকৃত যোগ্য ব্যক্তিরা বিচারক হিসেবে নিয়োগ হবেন— এমন একটি চাহিদা সমাজে বহু বছর ধরে ছিল। এখন এ বিষয়ে আইন হয়েছে। একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উচ্চ আদালতে বিচারকেরা নিয়োগ পাবেন।’
আইন ও বিচার উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দাবি সমাজে দীর্ঘদিন ধরে আছে। এটি একটি জাতীয় ঐকমত্যে পরিণত হয়েছে। এটির উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। খুঁটিনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একটি সময় লাগছে।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস (রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী) চালুর উদ্যোগের কথা জানিয়ে বলেন, কিছু অভিযোগ আছে, সরকারি কৌঁসুলিরা যেহেতু দলীয়ভাবে নিয়োগ পান সে জন্য তারা অনেক সময় নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারেন না। রাষ্ট্রের পক্ষে ভূমিকা পালন না করে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে ভূমিকা পালন করেন। এর সমাধান হচ্ছে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা। সে লক্ষ্যে আইন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এক মাসের মধ্যে এটি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News