ডেস্কঃ রিপোর্টার :

দিনাজপুর থেকে রাজধানী ঢাকায় আসা সাবেক বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আজ একটি বিশেষ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। তারা দাবি করেছেন, ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডে চাকরি হারানো নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের ক্ষতিপূরণ এবং চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক।

আজ সকালে ঢাকার জিগাতলা এলাকায় বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেন। এই কর্মসূচির মূল দাবি ছিল পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের পুনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণ। তাদের মধ্যে একজন, সাদিয়া রহমান, যিনি সাবেক বিডিআর সদস্য শওকত আলীর মেয়ে, সরকারের কাছে ইনসাফের দাবিতে আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

"আমরা কচুরিপানার মতো ভাসছি, আমাদের কোনো স্থির জায়গা নেই। আমার বাবা নির্দোষ ছিল, তাকে বিদ্রোহী সৈনিকের ট্যাগ দিয়ে সুচিকিৎসা ও সম্মান দেয়া হয়নি। আমাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা ইনসাফ চাই, আমাদের বাবাদের চাকরি ফেরত দেওয়া হোক এবং ক্ষতিপূরণ দেয়া হোক।"

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর সরকারি সিদ্ধান্তে চাকরি হারানো হাজারো নিরপরাধ বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা আজও পরিষ্কারভাবে জানতে চান, কেন তাদের চাকরি ও সম্মান কেড়ে নেয়া হয়েছিল।

আরেকটি হৃদয়বিদারক সাক্ষাৎকারে, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য মো. জাহিদুল আলম কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, তিনি পিলখানা হত্যাকাণ্ডে কিছুই জানতেন না এবং তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও ছিল না। তারপরেও তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

"আমি কোন অপরাধে জড়িত ছিলাম না, তবুও কেন আমাকে চাকরিচ্যুত করা হলো, আমি জানি না। আমি সীমান্তে দায়িত্ব পালন করেছি, বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য কাজ করেছি। কিন্তু আজও জানতে পারিনি কেন আমার চাকরি চলে গেল।"

এই অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে বিডিআর সদস্যরা বর্তমান বিজিবি মহাপরিচালকের কাছে এক আর্জি জানিয়েছেন। তারা বলেন, "আমরা বিশৃঙ্খলা করতে আসিনি, আমরা ইনসাফ চাই, আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দেয়া হোক।"

বিডিআর সদস্যদের এই আন্দোলন ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা এলাকায় উপস্থিত রয়েছেন।

এদিকে, সরকার ও বিজিবি মহাপরিচালককে বার্তা পাঠিয়ে বিডিআর সদস্যরা পুনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে সহানুভূতির আশা করছেন। তারা দৃঢ় প্রত্যয়ে বলছেন, "আমরা আমাদের অধিকার চাই, আমরা মানবেতর জীবনযাপন আর করতে পারি না।"