ডেস্ক রিপোর্টার :

দুর্নীতির অভিযোগে তিনজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তলবপ্রাপ্তরা হলেন—যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) তুহিন ফারাবি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব এ বি এম গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীর।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, কেনাকাটা ও বদলি বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনব্যাপী তলব করা হয়েছে। ২০ মে তুহিন ফারাবি ও ডা. মাহমুদুল হাসান, ২১ মে গাজী সালাউদ্দিন এবং ২২ মে মোয়াজ্জেম হোসেনকে হাজির হতে বলা হয়েছে।

এই তদন্তের সূত্রপাত ঘটে গত ২৭ এপ্রিল, যখন 'যুব অধিকার পরিষদ' নামে একটি সংগঠন ‘মার্চ টু দুদক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দুদকে স্মারকলিপি দেয়। একই ধরনের অভিযোগ জমা দেন হাইকোর্টের দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাদিম মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম।

মামলা দায়ের না হলেও তদন্ত শুরুর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল পদত্যাগ করেন এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ছাত্র প্রতিনিধি পিও তুহিন ফারাবিকেও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

২১ এপ্রিল এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় দলটি।

বিশেষ করে গাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পাঠ্যবই ছাপার কাগজ কেনায় কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ গুরুতর বলে মনে করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। অভিযোগ অনুযায়ী, বাজারদরের চেয়ে টনপ্রতি ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা বেশি দামে কাগজ কিনতে বাধ্য করা হয়েছে ছাপাখানাগুলোকে। নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে কাগজ কিনলে বই ছাপার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

এভাবে কেবল কাগজ থেকেই শত কোটি টাকার বেশি কমিশন নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এনসিটিবির কয়েকজন কর্মকর্তা এবং তানভীরের বিরুদ্ধে।

দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের ভিত্তি পাওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তদন্তে অপরাধ প্রমাণ হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।