ডেস্ক রিপোর্টার :

আজ ২৫ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ, রোববার) বাংলা সাহিত্যের চিরপ্রাণ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী। জাতীয় কবিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে জাতি। ১৩০৬ বঙ্গাব্দে বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া এই মহাকবির ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। পিতা কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুনের সন্তান নজরুল হয়ে ওঠেন কালের শ্রেষ্ঠ কণ্ঠস্বর।

বিদ্রোহ, প্রেম, মানবতা ও সাম্যের বার্তা ছড়িয়ে তিনি বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীতকে উপহার দিয়েছেন নতুন মাত্রা। অসাম্প্রদায়িক চেতনার রূপকার হিসেবে তার লেখনী যুগে যুগে ছিল প্রেরণার উৎস। শুধু সাহিত্যিক নন, নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, গীতিকার, সুরকার, উপন্যাসিক, সাংবাদিক, নাট্যকার ও অভিনেতা। বাংলা সঙ্গীতে অসংখ্য রাগ-রাগিণী সৃষ্টি করে তিনি হয়ে উঠেছেন ‘নজরুলসঙ্গীত’-এর জনক।

জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। আজ বিকেল ৩টায় কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজনের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অনুষ্ঠানে ২০২৩ ও ২০২৪ সালের নজরুল পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে গুণীজনদের হাতে। নাচ, গান, নাটক ও আলোচনা দিয়ে সাজানো এই আয়োজন চলবে আগামী তিন দিন।

এছাড়া ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়েও থাকছে পৃথক উৎসবের আয়োজন। ত্রিশালে তিন দিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী উদযাপন করা হবে নজরুল জয়ন্তী।

বাংলা একাডেমি জাতীয় কবির জন্মদিনে সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। বিকেল ৪টায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত হবে নজরুল বিষয়ক বিশেষ সেমিনার, যেখানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।

নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষে ছায়ানট আয়োজন করেছে দুই দিনের উৎসব। আজ সন্ধ্যায় শুরু হবে এই বিশেষ আয়োজন, যেখানে একক ও সম্মেলন গান, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশনায় মুখরিত হবে মঞ্চ।

এদিকে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কর্মী সংঘ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে আয়োজন করেছে আরও একটি নজরুল উৎসব, যা চলবে দুই দিনব্যাপী।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নজরুলের গান ছিল উদ্দীপনার অনির্বাণ উৎস। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে সপরিবারে বাংলাদেশে এনে দেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও সম্মান। ধানমন্ডিতে বাসস্থান প্রদানসহ তার স্বপ্নবিন্দুগুলোকে বাস্তব রূপ দিয়েছিলেন তিনি।

আজকের দিনে কবির অমর বাণী আবারও নতুন করে জেগে ওঠে—

“গাহি সাম্যের গান—

যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান...”