ছবি সংগৃহীত
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ঘটেছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের ২৩তম দিনে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীরের নেতৃত্বে প্রথমে সচল করা হয়েছে দীর্ঘদিন অচল থাকা ৯৫টি চিকিৎসা যন্ত্র। এরপর হাসপাতালে প্রভাব বিস্তারকারী অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটকে উৎখাত করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মাত্র চারদিনে ন্যাশনাল ইলেকট্রো ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিউ অ্যান্ড টিসি)-এর সাত সদস্যের একটি কারিগরি টিম অকেজো পড়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ মেশিনগুলো সচল করে। রেডিওলজি, ইমেজিং, প্যাথলজি, সিসিইউ, আইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, চক্ষু, সার্জারি ও নাক-কান-গলা বিভাগে এই কাজ সম্পন্ন হয়।
চিকিৎসকদের ভাষায়, এত অল্প সময়ে এত সংখ্যক মেশিন সচল হওয়া সাম্প্রতিক সময়ে একটি বড় সাফল্য। ৬টি অ্যানেস্থেসিয়া মেশিন, ২৫টি সাকশন মেশিন, ১০টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর, ৮টি অপারেশন টেবিল, ৫টি ব্লাড ব্যাংক রেফ্রিজারেটর, ১০টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, ৬টি অপারেশন থিয়েটারের লাইটসহ মোট ৯৫টি যন্ত্র পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী হয়েছে। এর ফলে চিকিৎসা সেবায় গতি আসবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, চিকিৎসা যন্ত্র সচল করার পাশাপাশি হাসপাতাল চত্বর থেকে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ২০টি মাইক্রোবাস অবৈধভাবে অ্যাম্বুলেন্সে রূপান্তর করে রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতো একটি প্রভাবশালী চক্র। তাদের দৌরাত্ম্যে অনেক সময় রোগীরা সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হতেন।
এই প্রেক্ষাপটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন নিয়ম চালু করেছে। এখন থেকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বরে পার্কিং করতে পারবে না। রোগী নামিয়ে দিয়েই বের হয়ে যেতে হবে। অন্যদিকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশে। মোট ৭টি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স নির্ধারিত ভাড়ায় রোগীদের সেবা দেবে—শহরের মধ্যে ৩০০ টাকা এবং শহরের বাইরে প্রতি কিলোমিটারে ১০ টাকা। ভাড়ার তালিকা প্রকাশ ও একটি হটলাইন (০১৭৮২৭৫৫৫০০) চালু করা হয়েছে, যাতে রোগীরা সহজেই সেবা নিতে পারেন।
হাসপাতাল পরিচালক ডা. মশিউল মুনীর জানিয়েছেন, বৈধ অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারে রোগীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং মেশিনগুলো সচল থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রম আরও সহজ হবে। তিনি বলেন, “রোগীদের যেন আর ভোগান্তিতে পড়তে না হয়, সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
এদিকে রোগী ও স্বজনরা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, আগে সিন্ডিকেটের কারণে ইচ্ছেমতো অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করা যেত না, ভাড়া নিয়েও হতো জুলুম। এখন এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
অন্যদিকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা বলছেন, এতে রোগীদের ভোগান্তি বাড়বে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকারি সেবাই হবে সবচেয়ে সহজ, দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ৯৫টি মেশিন সচল করা এবং অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট উচ্ছেদ—দুই মিলিয়ে শেবাচিম হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো।
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News