ছবি সংগৃহীত
ভোলার চরফ্যাশনের নদীঘেরা ২০টি দুর্গম চরে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের বসতি। অন্ন ও বস্ত্রের ক্ষীণ চাহিদা পূরণ হলেও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং বিশুদ্ধ পানির মতো মৌলিক সেবা থেকে তারা এখনও বঞ্চিত। একদিকে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, অন্যদিকে ভূমিদস্যু, জলদস্যু ও প্রতারকদের কবলে পড়ায় প্রতিনিয়তই তাদের জীবন বিপন্ন। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বহুবার নালিশ দিচ্ছিলেও, চরবাসীরা মূল স্রোতধারার বাইরে পড়ে রয়েছেন।
চরের শিশুদের শিক্ষাব্যবস্থা সবচেয়ে ভেঙে পড়েছে। ঢালচরের প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে ক্লাস করছে। পর্যাপ্ত আসন, খেলার মাঠ বা টয়লেট নেই। শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৭০-এ। ঢালচর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আমীর হোসেন বলেন, “ভাঙনের কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। ক্লাস চালু রাখা খুবই কঠিন।”
যোগাযোগব্যবস্থা চরাঞ্চলের দীর্ঘকালীন সমস্যা। বর্ষায় হাঁটতেও হাঁটুসমান পানি পার হতে হয়। সিকদারচরে কোনো পাকা রাস্তা বা সেতু নেই। কাঁচা সড়কের শোচনীয় অবস্থার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চরবাসীর প্রায় ২০ হাজার মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত।
সুপেয় পানির সংকটও মারাত্মক। নদী ও সাগরের মাঝেই বসবাস হলেও নিরাপদ পানির উৎস নেই। গভীর নলকূপও কম, যা নষ্ট হয়ে পড়েছে। জেলেরা মাছ ধরতে গেলে নদীর নোংরা পানিই পান করে। চরফকিরার বাসিন্দা মালেক মাঝি বলেন, “আমাগো খাওয়ার পানির (সুপেয়) অভাব। কল বেশির ভাগ সময় নষ্ট থাকে।”
স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে চরাঞ্চল এখনো শূন্য। পানিবাহিত রোগ, চর্মরোগ, জ্বর ও পাতলা পায়খানা সাধারণ সমস্যা। অনেকেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মুখ দেখেননি, ঝাড়ফুঁকের ওপর নির্ভর করছেন।
চরের মানুষ শুধু প্রাকৃতিক বিপদেই নয়, মানবসৃষ্ট বিপদেও আতঙ্কিত। বর্ষার সময় জেলেদের ওপর জলদস্যুদের হামলা এবং ধানের মৌসুমে ভূমিদস্যুর দৌরাত্ম্য চরবাসীর জীবনে ক্রমাগত ভয় সৃষ্টি করছে।
চরবাসী আশা প্রকাশ করেছেন, সরকারি উদ্যোগে সেতু, রাস্তা ও টিউবওয়েল নির্মাণের মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নত হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জানিয়েছেন, ভাঙন প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিটি ইউনিয়নে গভীর নলকূপ স্থাপনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে চরাঞ্চলের সুপেয় পানির সংকট অনেকাংশে সমাধান হবে।
চরফ্যাশনের চরগুলো নদী ও সাগরের মাঝে অবস্থান করায় এখানকার মানুষের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে, ভবিষ্যতে চরের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে।
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News