ডেস্ক রিপোর্টার :

“ছেলে-মেয়ে লইয়া ঘুমাইতেছিলাম, হঠাৎ এক ঝাপটায় সব উড়ায়ে নিল”—এভাবেই নিজের সর্বস্ব হারানোর বেদনা প্রকাশ করছিলেন নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের আগদিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল মিনা (৪০)।

মাত্র ১০ মিনিটের এক ভয়াবহ ঝড়ে তিনি হারিয়েছেন তার ঘর, নিরাপত্তা আর সামনের ঈদের স্বপ্ন। বাঁশের খুঁটি, টিনের চালা ও টিনের বেড়ায় তৈরি সেই ঘরটি এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন রেজাউল।

গত রোববার (১ মে) রাতে হঠাৎ করে শুরু হওয়া প্রবল ঝড়ে তার বাড়িটি সম্পূর্ণভাবে মাটিতে মিশে যায়। ছেলেমেয়ে নিয়ে ঘরের ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন তারা। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেও ঘরটি আর রক্ষা করা যায়নি। পরদিন সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিনের চালা উড়ে গেছে, কেবল মাটির মেঝেতে পড়ে রয়েছে ভাঙা আসবাবপত্র, জামাকাপড় ও বইখাতা।

রেজাউল মিনা জানান, “ধার-দেনা কইরা ঘরটা বানাইছিলাম। এখন আবার সব শেষ। সামনে ঈদ, ঘর নাই, ঠিকানার ঠিক নাই। এহন কই যাই?”

স্থানীয় ইউপি সদস্য নেছের আলী জানান, ঝড়ের রাতে ঘরটি পুরোপুরি উড়ে গেছে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং রেজাউলকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন।

এদিকে একই গ্রামের বাসিন্দা মিরন শেখ বলেন, “রেজাউল খুবই গরিব মানুষ। এই ঘরটাও ধার-কর্জ কইরা বানাইছিল। এখন যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইছে, সরকারি সহায়তা ছাড়া তার পক্ষে আর কিছু করা সম্ভব না।”

নড়াইল সদর উপজেলার ইউএনও সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, “যারা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তারা আমাদের কাছে আবেদন করলে সরকারি বিধি অনুযায়ী সহায়তা দেওয়া হবে।”

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রশাসন ও সমাজের সক্ষম মানুষদের আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।