ডেস্ক রিপোর্টার :

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার এক সাধারণ কৃষক সোহাগ মৃধা। নিজের ছেলের মতো লালন করা ফ্রিজিয়ান জাতের বিরল এক ষাঁড় ‘কালো মানিক’-কে উপহার হিসেবে দিতে রওনা হয়েছেন ঢাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনের উদ্দেশে।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল ১০টায় সুবিদখালি বাজার থেকে ব্যান্ড পার্টি, সাউন্ড সিস্টেম ও সুসজ্জিত ট্রাক বহরের মাধ্যমে শুরু হয় এই ব্যতিক্রমী শোভাযাত্রা।

সোহাগ মৃধা বলেন, “কালো মানিককে আমি নিজের সন্তানের মতো লালন করেছি। ছয় বছর ধরে পরিচর্যা করেছি। এটি আমি নিজ হাতে খালেদা জিয়ার কাছে উপহার দিতে চাই। শুধু চাই, আমার নেত্রী যেন এটি গ্রহণ করেন—এতেই আমি সন্তুষ্ট।”

এই ষাঁড়ের ওজন প্রায় ৩৫ মণ, দৈর্ঘ্য ১০ ফুট, আর উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। বিরল আকৃতির জন্য এর প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ তুঙ্গে। সকাল থেকে সোহাগের বাড়িতে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। স্থানীয়দের আবেগ ও অনুরোধে কালো মানিককে নিয়ে সোহাগ ঘুরে দেখান উপজেলা শহরের সড়কগুলো।

আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, “সোহাগ আমার ভাতিজা, কালো মানিক তাদের পরিবারের শেষ সম্বল। বহুবার বোঝানোর পরও সে থামেনি। আবেগ থেকে সে নেত্রীর জন্য এই উপহার নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সকলের অনুরোধ, খালেদা জিয়া যেন এই উপহার গ্রহণ করেন।”

সোহাগের সঙ্গে আছেন তার ছেলে এবং অর্ধশতাধিক সঙ্গী। তাঁদের শোভাযাত্রা শুধু একটিই বার্তা দেয়—একজন কর্মীর ভালোবাসা, আবেগ আর নিষ্ঠা কীভাবে নেত্রীর প্রতি উজাড় করে দেওয়া যায়।

২০১৮ সালের শেষ দিকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি গাভি কেনেন সোহাগ মৃধা। কিছুদিনের মধ্যেই গাভিটি একটি বাছুর দেয়। সেই বাছুরই আজকের কালো মানিক। ছয় বছরের কঠোর পরিচর্যায় গড়ে ওঠে এই দৃষ্টিনন্দন ষাঁড়টি। কৃষক সোহাগ কোনো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য নয়, একেবারে আবেগ থেকেই এই উপহারটি দিচ্ছেন।

যদিও খালেদা জিয়া উপহারটি গ্রহণ করবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে কর্মীর পক্ষ থেকে এমন ভালোবাসার নিদর্শন রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরল।

রাজনীতি যেখানে হরহামেশাই লাভ-লোকসানে মেপে দেখা হয়, সেখানে কৃষক সোহাগ মৃধার মতো একজন কর্মীর নিঃস্বার্থ আবেগ আর আস্থার প্রকাশ নতুন করে ভাবতে শেখায়—নেতৃত্ব মানে কেবল পদ নয়, তা অনুভবের নামও বটে।