ডেস্ক রিপোর্টার :

মায়ের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি না পেলেও জেলগেটেই শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখার সুযোগ পেয়েছেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ।

সোমবার (২ জুন) বিকেলে তার মা সালেহা বেগম (৮০) মৃত্যুবরণ করেন। রাত সোয়া ৮টায় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে নিয়ে আসা হয় সাবেক এই এমপিকে। সেখানে মাত্র কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে মায়ের নিথর মুখের দিকে চেয়ে থাকেন তিনি—অশ্রুসিক্ত চোখে জানান শেষ বিদায়। এরপর তাকে আবার ফিরিয়ে নেওয়া হয় কারাগারে।

আসাদুজ্জামান ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে রাজনৈতিক পালাবদলের পর গেল বছরের ৫ আগস্ট ঢাকায় গ্রেপ্তার হন তিনি। বর্তমানে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি।

স্বজনদের ভাষ্য, মায়ের মৃত্যুর পর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হলেও, নিরাপত্তাজনিত কারণে তা অনুমোদন পায়নি। তবে, তার চাচার আবেদনের ভিত্তিতে তাকে জেলগেটে মৃত মায়ের মুখ দেখার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) উম্মে কুলসুম সম্পা জানান, সাবেক এমপির চাচা একটি দরখাস্ত দেন। তাদের অনুরোধ ছিল যেন কারা ফটকে মৃত মাকে দেখার সুযোগ দেওয়া হয়। সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আসাদুজ্জামান রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর ভাটাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাদের পরিবারে সাত ভাই-বোন। এর মধ্যে পাঁচ ভাই রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। কিন্তু এখন চার ভাই আত্মগোপনে এবং আসাদ কারাগারে। তাই মায়ের জানাজা বা দাফনেও তারা কেউ উপস্থিত থাকতে পারেননি। শুধু এসেছিলেন তৃতীয় ভাই আক্তারুজ্জামান, যিনি রাজনীতিতে যুক্ত নন। জীবিকা নির্বাহ করেন একজন প্রাইভেটকার চালক হিসেবে।

সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় রাজশাহী নগরের মহিষবাথান কবরস্থানে সালেহা বেগমের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় স্বজনরা উপস্থিত থাকলেও, চারপাশে ছিল শোক, নীরবতা এবং একটি রাজনৈতিক পরিবারের নিঃশব্দ কান্না।

এই ঘটনাটি আবারও স্মরণ করিয়ে দিলো রাজনীতির উত্থান-পতনের বাস্তবতা এবং ব্যক্তিগত জীবনে তার চরম প্রভাব।