ডেস্ক রিপোর্টার :

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পাল্টাপাল্টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে উভয় দেশ। এর ফলে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

শনিবার বিকেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টার আলোচনার পর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী—নরেন্দ্র মোদি ও শেহবাজ শরিফ—এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান বলে জানান ট্রাম্প ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পরপরই ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লি থেকে আলাদাভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ শনিবার রাতেই জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেন, “পাকিস্তান দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের মতোই আচরণ করেছে। নয়াদিল্লিকে যথাযথ জবাব দেওয়া হয়েছে। এবার আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাই।” তিনি আরও জানান, সফলভাবে ‘অপারেশন বুনিয়ান মারসুস’ পরিচালনার জন্য রোববার দেশজুড়ে ‘ইয়াওমে তাশাক্কুর’ বা জাতীয় কৃতজ্ঞতা দিবস পালিত হবে।

তবে যুদ্ধবিরতির শান্ত আবহ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টা পরই ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি দাবি করেন, পাকিস্তান সমঝোতা ভঙ্গ করেছে এবং ভারত তার জবাব দিচ্ছে। তিনি বলেন, “সীমান্তে একাধিকবার যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জবাব দিতে প্রস্তুত এবং পরিস্থিতি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।”

একইসঙ্গে, কাশ্মীরের আকাশে অজ্ঞাত বস্তু উড়তে দেখা গেছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।

অন্যদিকে পাকিস্তান সরকার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “ভারতীয় বাহিনী যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে, কিন্তু পাকিস্তান এখনো দায়িত্বশীলতা বজায় রেখে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।”

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “পাকিস্তান কখনো যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের কথা ভাবেওনি। এখন দেশের জনগণের মধ্যে উৎসবের পরিবেশ বিরাজ করছে। আমরা যেভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি, তাতেই আমাদের বিজয় প্রমাণিত হয়েছে।”

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র আহ্বান জানিয়েছে।