ডেস্ক রিপোর্টার :

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার আবেদন সংক্রান্ত আপিল শুনানি ফের মুলতবি করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ শুনানি গ্রহণ করেন। একপর্যায়ে আদালত শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন।

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।

এর আগে, ১২ মার্চ শুরু হওয়া এ শুনানি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পর ৭ মে দিন ধার্য করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ফের শুনানি শুরু হলেও তা মুলতবির আদেশে গড়ায় বুধবারে।

পেছনের প্রেক্ষাপট:

২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট এক রায়ে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে। এরপর নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এ রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। কিন্তু মূল আইনজীবীর অনুপস্থিতিতে ২০২৩ সালের নভেম্বরে আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল খারিজ করে দেয়। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে।

তবে পরে জামায়াত আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করে। ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর আপিল বিভাগ সে আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির পথ সুগম করে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:

বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার এ লড়াই শুধু একটি দলের নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ একদিকে দলটির অতীতের ভূমিকা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক, অন্যদিকে গণতান্ত্রিক পরিসরে সকল দলকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে।

এদিকে গত বছরের আগস্টে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু একই মাসেই সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নতুন প্রজ্ঞাপন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এই পটভূমিতে জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহালের শুনানি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসছে বুধবার।