ডেস্ক রিপোর্টার :

২৩ বছর বয়সেই ২৫টি বিয়ে! শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এটাই বাস্তব ভারতের রাজস্থানের অনুরাধা পাসওয়ানের জীবনে। তবে প্রেম কিংবা পারিবারিক বন্ধনের খাতিরে নয়—এই বিয়েগুলো ছিলো প্রতারণার পাকা ফাঁদ।

বাবা-মা হারা, দরিদ্র এক নারী—এভাবেই নিজেকে পরিচয় দিতেন অনুরাধা। ‘একটা ভালো ঘর খুঁজছেন’—এই আবেগঘন গল্প শুনিয়ে ফাঁসাতেন যুবকদের। তার ‘ভাই’ রয়েছে, কিন্তু সে নাকি রোজগার করে না। জীবনটাকে নতুনভাবে গড়ার স্বপ্নে সহানুভূতি আদায় করতেন তিনি।

সেই সহানুভূতি থেকেই কেউ না কেউ প্রেমে পড়তেন, আর হয়ে যেত বিয়ে। বিয়ের পরেই অনুরাধা চালাতেন তার মূল খেলাটি। ভালো বউয়ের অভিনয় করে শ্বশুরবাড়ির মন জয় করে নিতেন। এরপরই খাবারে মিশিয়ে দিতেন নেশাদ্রব্য। সবাই অচেতন হলেই নগদ টাকা, গয়না, মোবাইলসহ যা কিছু পাওয়া যেত, সব লুট করে চম্পট দিতেন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, এটি একক কোনো প্রতারণা নয়। অনুরাধা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের হোতা। তাদের কৌশল ছিল শহর থেকে শহরে ঘুরে বেড়িয়ে নতুন নাম-পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেওয়া। এরপর অভিনয় করতেন গরিব মেয়ে সেজে। দলের অন্য সদস্যরা তার ছবি এবং ‘বেদনাদায়ক’ গল্প নিয়ে হাজির হতেন সম্ভাব্য বরের পরিবারে।

বিয়ের আয়োজনও করতো ওই চক্র। কখনও মন্দিরে, কখনও বাড়িতেই হতো বিয়ে। একবার বিয়ে হয়ে গেলে শুরু হতো অনুরাধার আসল রূপ।

সবশেষ প্রতারণা হয় গত ২০ এপ্রিল। সোয়াই মাধোপুরের যুবক বিষ্ণু শর্মার সঙ্গে ধুমধাম করে বিয়ে করেন অনুরাধা। দুই সপ্তাহের মাথায় গয়না, নগদ অর্থ ও মোবাইল নিয়ে গা-ঢাকা দেন। বিষ্ণু থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তে নেমে পুলিশ অবশেষে ১৮ মে গ্রেপ্তার করে অনুরাধাকে।

পুলিশ বলছে, এখন তাদের টার্গেট অনুরাধার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের খুঁজে বের করা। তদন্তে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসার আশঙ্কা রয়েছে।