ডেস্ক রিপোর্টার :

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ এক রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়ে জামায়াতে ইসলামীকে আবারও রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

রবিবার (১ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। এই রায়ের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালে হাইকোর্টের দেওয়া নিবন্ধন বাতিলের রায় বাতিল করে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হলেও দলটির প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ পুনরায় বরাদ্দ দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি আপিল বিভাগ। আদালত বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টি এখন কমিশনের নীতিনির্ধারকদের হাতে।

জামায়াতের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন এবং ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম।

আইনি লড়াইয়ের দীর্ঘ এক দশক পেরিয়ে এসে দলটি আবারও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে সংবিধানসম্মত অধিকার ফিরে পেল। ২০১৩ সালে হাইকোর্ট এক রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে বলেছিল, দলটির গঠনতন্ত্র সংবিধানবিরোধী। এরপর থেকে জামায়াত নির্বাচনে অংশ নিতে পারছিল না।

এই রায়ের ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে সমীকরণ বদলানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতের সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জোট ও কৌশলগত অবস্থানকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তবে রায়ের পরপরই জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নির্বাচন কমিশনও এই বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো বক্তব্য দেয়নি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যেই এই রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, আদালতের রায়কে সম্মান জানাতে হবে, আবার কেউ কেউ জামায়াতের অতীত কর্মকাণ্ড স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, "এই রায় আইনের শাসনের এক দৃষ্টান্ত হলেও, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হবে নিবন্ধিত সব দলের গঠন, কার্যক্রম ও নীতিমালা পর্যবেক্ষণ করা।"