ছবি সংগৃহীত
টেস্ট মর্যাদার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিসিবির ঘোষণা ছিল দেশের প্রতিটি জেলায় হবে ক্রিকেট কার্নিভাল। এর জন্য প্রতিটি জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে দেয়ার কথা ছিল ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু বাস্তবে সময় পেরিয়েছে দেড় মাস, এক টাকাও পৌঁছায়নি জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোর হাতে।
বিসিবির এই উদাসীনতা ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে জেলা পর্যায়ে আয়োজকদের পড়তে হচ্ছে চরম আর্থিক সংকটে। এমনকি স্কুল ক্রিকেট আয়োজনেও রয়েছে স্পন্সর অর্থ না পৌঁছানোর অভিযোগ। অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির বিরুদ্ধে।
২০২৫ সালের শুরুতে বিসিবি ঘোষণা দেয়—টেস্ট মর্যাদার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে প্রতিটি জেলায় অনূর্ধ্ব-১২ ক্রিকেট কার্নিভাল হবে। নির্দেশনা দেওয়া হয় স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে। একই সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়ার।
কিন্তু সময় গড়ালেও সেই অর্থ এখনো পৌঁছায়নি। ফলে নিজেদের খরচেই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে বাধ্য হয়েছেন আয়োজকরা। অনেকেই ব্যয়ভার টানতে গিয়ে ব্যক্তিগত ঋণেও জড়িয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন,
“আমরা বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগে যোগাযোগ করেছি। বলা হয়েছিল, ২৫ তারিখের পর টাকা চলে আসবে। কিন্তু মাস পার হয়ে গেছে, এখনও টাকা নেই। ব্যাংক স্টেটমেন্টও দিতে পারছি না। এখন স্কুলগুলো আমাদের টাকা চাইছে।”
শুধু কার্নিভালই নয়, একই ধরনের সমস্যা দেখা গেছে প্রাইম ব্যাংক স্কুল ক্রিকেট নিয়েও। জানুয়ারিতেই প্রাইম ব্যাংক পুরো অর্থ বুঝিয়ে দিলেও, জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলো আজও পায়নি সে অর্থ।
একজন কর্মকর্তা বলেন,
“স্কুলগুলো প্রতিদিন ফোন দেয়। ফাইনাল হয়ে গেছে মাসখানেক আগে। প্যান্ডেল, মাঠ সব নিজেরা করিয়েছি। বাধ্য হয়ে কিছু স্কুলের ফোন ব্লক করে রেখেছি।”
এই ঘটনাগুলো থেকে প্রশ্ন উঠছে—প্রাইম ব্যাংক যেহেতু টাকা দিয়েছে, তাহলে সেই টাকা কোথায় গেল?
দেশের সব জেলা ক্রীড়া সংস্থাই চলছে অ্যাডহক কমিটিতে। ফলে সংস্থার নিজস্ব তহবিল ব্যবহারে আছে সীমাবদ্ধতা। অন্যদিকে বিসিবি থেকে প্রতিশ্রুত অর্থ না পেয়ে কোনো প্রকার সহযোগিতা ছাড়াই তারা ক্রিকেট আয়োজন করছে। এতে ক্ষুব্ধ সংগঠকরা বলছেন,
“আমাদের হাতে কিছু নেই। টুর্নামেন্ট চালিয়ে যেতে গিয়ে আমাদের ইজ্জতই চলে যাচ্ছে।”
বিসিবি পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কিছু “অভ্যন্তরীণ জটিলতার” কারণে অর্থ ছাড় দিতে দেরি হচ্ছে। কিন্তু টানা কয়েক মাস ধরে অর্থ না পাওয়ায় অনেকেই মনে করছেন, এটি নিছক গাফিলতিই নয়—বরং এটি বিসিবির ভেতরের অদক্ষতা ও দুর্ব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি।
জাতীয় ক্রিকেট দল যখন বিশ্বমঞ্চে নিজেদের অবস্থান শক্ত করছে, তখন মাঠপর্যায়ের অব্যবস্থাপনা পুরো কাঠামোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। উৎসব নয়, এখন জেলার কর্মকর্তাদের কাছে কার্নিভাল মানে হলো কান্না-নিভৃত চাপ।
দেশজুড়ে ক্রিকেটের শিকড় মজবুত করতে হলে জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোর প্রতি সম্মান এবং দায়বদ্ধতা দেখানো বিসিবির অন্যতম কর্তব্য—এই বার্তাই এখন জোরালো হচ্ছে মাঠপর্যায়ের সংগঠকদের কণ্ঠে।
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News