ছবি সংগৃহীত
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুসলিমদের লক্ষ্য করে ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহে হাজারো মুসলিম পরিবারের ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এতে প্রাণহানির খবরও পাওয়া গেছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আসামের কোণে নীল ত্রিপল দিয়ে তৈরি অস্থায়ী শিবিরে শত শত পুরুষ, নারী ও শিশু আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের অধিকাংশই সরকারি জমি দখল করে বসবাস করার অভিযোগে উচ্ছেদে পড়েছেন।
আগামী বছরের রাজ্য নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বিজেপি শাসিত আসামে উচ্ছেদ অভিযান ত্বরান্বিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার দাবি করছে, “অনুপ্রবেশকারী” হিসেবে বাংলাদেশি মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গোলপাড়া জেলায় উচ্ছেদ হওয়া আরান আলী অভিযোগ করেন, “আমরা এখানে জন্মেছি, তবুও ‘বিদেশি’ ও ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলা হচ্ছে।” তিনি এবং তার পরিবার এখন খোলা জায়গায় জীবনযাপন করতে বাধ্য।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় বলছেন, “বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীরা ভারতের পরিচয়কে হুমকির মুখে ফেলছে” এবং তাদের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, রাজ্যের ৩১ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় ৩০%ই অভিবাসী মুসলিম, যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক প্রভীন দন্তি বলছেন, “বাংলাভাষী মুসলিমরা ভারতের কট্টরপন্থীদের সহজ টার্গেট।”
ভারতের বিরোধী দলগুলো অভিযানের সমালোচনা করে বলেছে, এটি নির্বাচনী কৌশল হিসেবে গণমেরুকরণে ব্যবহৃত হচ্ছে। কংগ্রেস দল বলেছে, ক্ষমতায় এলে উচ্ছেদকৃতদের পুনর্বাসন করবে এবং দোষীদের শাস্তি দেবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশি ‘অবৈধ অভিবাসী’ শনাক্ত করে বিভিন্ন রাজ্যে তাদের উচ্ছেদ করছে। এই ধারা আরও বেড়েছে ২০২৪ সালের পর থেকে, যখন বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন এবং ‘হিন্দুদের ওপর হামলার’ ঘটনার পর দুই দেশের সম্পর্ক জটিল হয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে দুই কোটি অবৈধ বাংলাদেশি রয়েছেন। গত মে মাসে তারা বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ২,৩৬৯ জনের তালিকা পাঠিয়েছে, তবে বাংলাদেশ সরকার এখনও এ বিষয়ে সাড়া দেয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসামে জাতিগত জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ মিশে গিয়ে বাংলাভাষী মুসলিমদের প্রতি ভারতীয় রাজনীতিতে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করেছে।
এই পরিস্থিতিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের বসবাসের অধিকার ও নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ভারত সরকারের নীতিকে সমালোচনা করে বলছে, এটি বৈষম্যমূলক এবং ঝুঁকিপূর্ণ।
আসামে মুসলিম উচ্ছেদ ও বাংলাদেশে বিতাড়ন বিষয়ক এই প্রতিবেদন আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের প্রতি সমালোচনার তীর ছুঁড়েছে। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও মানবিক সমাধানের দিকে গড়াতে প্রয়োজন সমঝোতা ও সংলাপ।
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News