ডেস্ক রিপোর্টার :

কুয়েতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিষাক্ত মদে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৩ জনের। গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও শতাধিক। এই ঘটনায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন বাংলাদেশিও রয়েছেন, যিনি এ চক্রের নেতৃত্বে ছিলেন বলে জানা গেছে।

রোববার  আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাজধানীসহ বিভিন্ন আবাসিক ও শিল্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়টি মদের কারখানা এবং চারটি প্রস্তুতিহীন কারখানা জব্দ করা হয়েছে। তদন্তে জানা যায়, এসব কারখানায় মদের সঙ্গে মিশ্রিত করা হতো মিথানল নামের এক ধরনের বিষাক্ত অ্যালকোহল। এক নেপালি সদস্য তদন্তকারীদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কুয়েতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিষাক্ত মদপান করে অন্তত ১৬০ জন গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন। এদের মধ্যে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই এশীয় নাগরিক।

অসুস্থদের মধ্যে অন্তত ৫১ জনকে জরুরি ভিত্তিতে কিডনি ডায়ালাইসিস করাতে হয়েছে এবং ৩১ জনকে ভেন্টিলেশনে নিতে হয়েছে।

কুয়েতে প্রবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ ভারতীয়রা। দেশটির ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে প্রায় ৪০ জন ভারতীয় নাগরিককে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে, অনেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন, আবার কেউ ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।

আল জাজিরা বলছে, মিথানল একটি বর্ণহীন অ্যালকোহল, যা মূলত শিল্প ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করা হয়। এটি চেনা কঠিন এবং এর বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেরিতে প্রকাশ পায়। যেমন— বমি, পেটব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা অন্ধত্ব। আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস’-এর তথ্যমতে, সময়মতো চিকিৎসা না পেলে মিথানল বিষক্রিয়ার মৃত্যুহার ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।

কুয়েত মুসলিম প্রধান দেশ, যেখানে মদ উৎপাদন ও আমদানি আইনত নিষিদ্ধ। তবুও গোপনে এ ধরনের অবৈধ মদ তৈরির ঘটনা প্রাণঘাতী ঝুঁকি তৈরি করছে প্রবাসীদের জন্য।