ছবি সংগৃহীত
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় কি এবার বিশ্ব রাজনীতিকে পারমাণবিক উত্তেজনার মুখে ঠেলে দিচ্ছে? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মাঝে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি দু’টি পারমাণবিক অস্ত্রবাহী সাবমেরিন রাশিয়ার সীমান্তের আরও কাছে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এই ঘোষণার পেছনে মূল কারণ—রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের একটি উসকানিমূলক পোস্ট। ট্রাম্প ওই পোস্টকে এতটাই ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছেন যে তার প্রতিক্রিয়ায় দিয়েছেন একরকম সামরিক হুঁশিয়ারি।
ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, মেদভেদেভ ‘ডেড হ্যান্ড’ নামে পরিচিত রাশিয়ার স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক আক্রমণ ব্যবস্থার উল্লেখ করে এক ভয়াবহ বার্তা ছুড়ে দিয়েছিলেন। এর পরপরই ট্রাম্প সাবমেরিন মোতায়েনের কথা জানান।
তবে অবাক করা বিষয় হলো, রাশিয়া যেন এই ঘোষণাকে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছে না। রুশ সরকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়—কারোর পক্ষ থেকেই এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনো আসেনি। রুশ সংবাদমাধ্যমগুলো ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘রাজনৈতিক নাটক’ হিসেবে দেখছে।
রাশিয়ার এক সাবেক জেনারেল বলেন, “ট্রাম্প আসলে শুধু কথার ঝাঁজ বাড়াচ্ছেন। এতে বাস্তব কোনও নিরাপত্তা হুমকি নেই।” আরেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ট্রাম্পের বক্তব্যকে “সম্পূর্ণ বাগাড়ম্বর” বলে মন্তব্য করেছেন।
ট্রাম্পের এই ‘সাবমেরিন কূটনীতি’ নতুন নয়। ২০১৭ সালেও উত্তর কোরিয়াকে সতর্ক করতে তিনি কোরীয় উপদ্বীপে পারমাণবিক সাবমেরিন পাঠিয়েছিলেন। পরে আবার সেই কিম জং উনের সাথেই বৈঠকে বসেন তিনি।
তবে এবারের প্রেক্ষাপট একেবারেই আলাদা। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে এক চরম উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। এবং ঠিক এমন এক সময়ে ট্রাম্পের সাবমেরিন মোতায়েনের ঘোষণা আন্তর্জাতিক উদ্বেগ তৈরি করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ইন্টারনেট যুগের ‘কিউবান মিসাইল সংকট’ না হলেও তার ছায়া রয়েছে। পার্থক্য হলো—এই উত্তেজনার জন্ম হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল বরাবরই অপ্রত্যাশিত। হঠাৎ উত্তেজনা সৃষ্টি করে পরে আলোচনায় নিজেকে ‘বড় খেলোয়াড়’ হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা—এই প্যাটার্ন আগেও দেখা গেছে।
তবে রাশিয়া এখন পর্যন্ত এই উত্তেজনার ফাঁদে পা দেয়নি বলেই মনে হচ্ছে। বরং তাদের ‘নীরবতা’ ইঙ্গিত দিচ্ছে—মস্কো এই ঘটনার গুরুত্বই দিচ্ছে না।
বিশ্ব যখন ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির দিকে তাকিয়ে, তখন সামাজিক মাধ্যমে ব্যক্তিগত অপছন্দ থেকে জন্ম নেওয়া পারমাণবিক উত্তেজনার ঝুঁকি যেন আরেকটি নতুন শঙ্কা তৈরি করছে। ট্রাম্পের সাবমেরিন ঘোষণার পেছনে কৌশল থাক বা না থাক—এই বাস্তবতা অস্বীকার করা যাবে না যে, পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের নেতাদের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন বিবৃতি বিশ্ব নিরাপত্তাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে।
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News