প্রধান বিরোধী দলের আসনে স্বতন্ত্রদের জোট? আইন বলছে ‘সম্ভব’
বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতে আসার পর দ্বাদশ সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে কারা বসবেন, সেই আলোচনার পালে হাওয়া যোগাচ্ছে আইন ও সংবিধানের ব্যাখ্যা।
সাধারণ ধারণা হল, আসন সংখ্যায় সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল যাকে নেতা নির্বাচিত করবে, তিনিই বিরোধীদলীয় নেতার আসন পাবেন। তার দলই হবে সংসদের প্রধান বিরোধী দল।
গত দুটি নির্বাচনের মত এবারও ভোটের ফলে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে একাদশ সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। কিন্তু তাদের চেয়ে প্রায় ছয় গুণ আসনে দলনিরপেক্ষ প্রার্থীরা জিতে আসায় আলোচনা ঘুরে গেছে।
জানা-বোঝার চেষ্টা হচ্ছে তাদের কেউ বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসতে পারবেন কি না। তারা জোটবদ্ধ হয়ে বিরোধী দল হতে পারবেন কি না।
আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনত এটা ‘সম্ভব’। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পাওয়া একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, তারা শপথ নেওয়ার পর এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য বসবেন।
দশম সংসদেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোটবদ্ধ হয়েছিলেন। সাড়ে তিন বছর পর আবার এরা দল বেঁধে আওয়ামী লীগে ফিরেও গিয়েছিলেন।
এবারও যদি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোটবদ্ধ হয়ে কাউকে নেতা নির্বাচন করেন, তাহলে জাতীয় পার্টির প্রধান বিরোধী দল আর বিরোধীদলীয় নেতা পাওয়ার সুযোগ আর থাকবে না বলেন মনে করেন একাধিক বিশেষজ্ঞ।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এবার বিএনপি সমর্থকদের ভোট পাওয়ার আশা করেছিলেন। কিন্তু দলটির ভোটের বাক্স ছিল ফাঁকা। ঢাকায় ফিরে নেতাদের সঙ্গে বসে করণীয় ঠিক করবেন তিনি।
দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, তারা ঢাকায় ফিরে বিষয়টি নিয়ে বসবেন। এরপর তাদের অবস্থান জানাবেন।
দেড় শতাধিক আসনে আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী, জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া আসনে লাঙ্গলের প্রার্থীরা বেকায়দায় থাকা, নতুন দল তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম বা বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির ভোটের মাঠে আলোড়ন তুলতে না পারার পর যে প্রশ্নটি বারবার উঠতে থাকে, যেটি হল বিরোধী দল কোনটি হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভোটের আগে বলেছেন, “দাঁড়িয়ে যাবে।”
ভোটের পরদিন একই প্রশ্নে তিনি বলেছেন, “লিডার অব দ্য হাউস অর্থাৎ যিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
তবে শেখ হাসিনা বলেছেন, এটা তিনি করতে পারেন না। ভোটের পরদিন বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমাকে বলুন আপনি কী চান? আমি বিরোধী দল গঠন করব? আমি কি সেটা করতে পারি?”
সংবিধান কী বলে
আইনজ্ঞরা জানান, সংসদে বিরোধী দল কিংবা বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচনের বিষয়ে সংবিধানে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার স্পিকারের।
সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ২(১) (ট) ধারায় বলা হয়েছে, বিরোধীদলীয় নেতা অর্থ হল, “স্পিকারের বিবেচনামতে যে সংসদ সদস্য সংসদে সরকারি দলের বিরোধিতাকারী সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য লইয়া গঠিত ক্ষেত্রমতে দল বা অধিসঙ্গের নেতা।”
সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ৬২ জন হলেও একা একা তাদের বিরোধী দল হওয়ার সুযোগ নেই। তবে তারা সংসদে থাকা অন্য কোনো দলকে সমর্থন দিতে পারে। যে দলের সমর্থন বেশি হবে তারাই হবে বিরোধী দল।
“আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আলাদাভাবে জোট করতে পারে, তখন ওই জোটে কতজন হবে, সেই হিসেবে তারাও বিরোধী দল হতে পারে।”
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News