ডেস্কঃ রিপোর্টার :

রমজান মাস, মুসলিম উম্মাহর জন্য রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। এই পবিত্র মাসে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ রমজানের শেষ দশক, যা আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে নাজাত লাভের শেষ সুযোগ এনে দেয়। এই সময় আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে, প্রার্থনা করতে এবং নিজের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য একজন মুমিনকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হয়।

হজরত আয়েশা রদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশক শুরু হলে সারা রাত জেগে ইবাদত করতেন। তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও জাগিয়ে দিতেন এবং ইবাদতে মগ্ন হয়ে থাকতেন। এই সময় বিশেষভাবে ইতিকাফ করা এবং শবে কদর অনুসন্ধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইতিকাফ: রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ একটি বিশেষ ইবাদত। ইতিকাফের মাধ্যমে একজন মুমিন আল্লাহর কাছে নিজের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করতে এবং তাঁর নিকট ফযল-রহমত কামনা করতে পারেন। ইতিকাফ ইসলামের একটি প্রাচীন বিধান এবং নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও এই সময় ইতিকাফ করতেন। এটি সুন্নত, ওয়াজিব বা নফল আমল হতে পারে, যা সুবিধা অনুযায়ী পালন করা যায়।

শবে কদর: রমজানের শেষ দশকে শবে কদর খোঁজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহ তায়ালা শবে কদরকে হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ বলেছেন। এই রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন, এবং এটি শান্তির রাত, যা ফজর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শবে কদরকে শেষ দশকের বেজোড় রাতে খোঁজার জন্য বলেছেন।

কোরআন তিলাওয়াত: রমজান মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলোর মধ্যে কোরআন তিলাওয়াত অন্যতম। এই মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে, তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত লাভের চেষ্টা করা। প্রতি রাতে আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে একাত্ম হওয়ার জন্য কোরআন পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।

জিকির: জিকিরের মাধ্যমে অন্তরে শান্তি আসে। এটি একটি সহজ ইবাদত, যা যে কোনো অবস্থায় করা যেতে পারে—হাঁটতে হাঁটতে, কাজ করতে করতে, কিংবা বাসায় বসে। কোরআনে বলা হয়েছে, "আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমে অন্তর শান্তি পায়।" (সূরা আর-রাদ, আয়াত ২৮)

তাহাজ্জুদ নামাজ: রাত্রির শেষ ভাগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার মাধ্যমে মুমিন আল্লাহর কাছে বিশেষ দোয়া এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। রমজানের শেষ দশকে তাহাজ্জুদের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে অধিক পরিমাণে তাহাজ্জুদ পড়তেন এবং নিজের পরিবারকে জাগিয়ে রাখতেন।

রমজানের শেষ দশকের রাতগুলো হচ্ছে নাজাতের, মাগফিরাতের, এবং আল্লাহর রহমত লাভের সময়। মুমিনদের উচিত এই রাতগুলোতে বিশেষ ইবাদত ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা ও নাজাত লাভের চেষ্টা করা।