ছবি সংগ্রহীত
নববর্ষ মানেই রঙ, উৎসব, আর সৃজনশীলতার উচ্ছ্বাস। সে আনন্দে ভর করে আসছে পহেলা বৈশাখ ১৪৩২। রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে চলছে নববর্ষকে ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মূল ফোকাস এবারও—আনন্দ শোভাযাত্রা, যেখানে থাকছে থিমভিত্তিক মুখোশ, আলপনা, ভাস্কর্য ও ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা।
তবে এবারের আয়োজন একটু ভিন্ন বার্তা বহন করছে—স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি পুড়িয়ে ফেলার ঘটনার পর তার পুনর্নির্মাণ নিয়ে চলছে দমবন্ধ ব্যস্ততা।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, শোভাযাত্রার প্রধান মঞ্চের কাজ প্রায় শেষ। পেছনে পাটকাঠি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ব্যাকড্রপ, আর চারপাশে রঙিন বেলুনে ছেয়ে যাচ্ছে পুরো এলাকা। শিল্পীদের তুলির ছোঁয়ায় জেগে উঠছে প্রতীকী প্রতিরোধ, প্রতিবাদ এবং সংস্কৃতির রঙিন বার্তা।
আয়োজনের মূল আকর্ষণ—‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’। আগুনে পুড়ে যাওয়া এই ভাস্কর্য পুনর্গঠনে শিল্পীরা ব্যবহার করছেন ককশিটসহ হালকা উপকরণ। ইতোমধ্যে ভাস্কর্যের বেশিরভাগ দৃশ্যমান অংশ পুনরায় নির্মাণ শেষ হয়েছে।
এর পাশাপাশি জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে তৈরি হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী ১৫ ফুট উচ্চতার পানির বোতল—যা জনপ্রিয় থিম ‘মীর মুগ্ধের পানি লাগবে’ থেকে অনুপ্রাণিত। বোতলের ভেতরে থাকবে একাধিক খালি বোতল, প্রতীকীভাবে যা শহিদদের স্মরণ করাবে।
এবারের শোভাযাত্রায় আরও থাকবে—বড় আকৃতির ইলিশ মাছ, কাঠের বাঘ, পায়রা, পালকি, সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ, রঙিন চরকি, পটচিত্র এবং শিশুদের জন্য নাগরদোলা, মিনি ট্রেন ও খেলনার আয়োজন। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস থেকে আনা ১৮টি ঘোড়াও থাকবে শোভাযাত্রায়, যা দীর্ঘদিন ধরেই বৈশাখী আয়োজনে ঐতিহ্য বহন করছে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটেও বার্তা দিচ্ছে এবারের আয়োজন। ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে শোভাযাত্রায় রাখা হয়েছে ‘তরমুজের ফালি’ মোটিফ। আয়োজকরা জানান, ফিলিস্তিনের পতাকার প্রতিফলন তরমুজের রঙে—এটি এখন ‘প্রতিরোধের প্রতীক’ হিসেবে স্বীকৃত।
চারুকলা অনুষদের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিল্পী দীপক রঞ্জন সরকার বলেন, “নাশকতার কারণে কিছু কাজ বিলম্বিত হলেও আমরা দ্রুততার সঙ্গে পুনর্গঠন করছি। ‘মাছ’, ‘বাঘ’, ‘তরমুজের ফালি’, ‘পালকি’ এবং ‘মুগ্ধের পানির বোতল’ এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে। পুড়ে যাওয়া ‘৩৬ শে জুলাই’ ও ‘শান্তির পায়রা’ও পুনরায় নির্মিত হচ্ছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি শোভাযাত্রা সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য। শিল্পীরা তাঁদের শিল্পকর্ম দিয়ে বার্তা দিচ্ছেন সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বের প্রতি। আমরা প্রত্যাশা করি, সর্বস্তরের মানুষ এই ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন।”
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News