ছবি সংগ্রহীত
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পরকীয়ার অভিযোগে এক গ্রাম পুলিশ সদস্যকে জনতা জুতার মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানোর ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগের মুখে থাকা গ্রাম পুলিশ সদস্য সুশান্ত চন্দ্র দাস (৪৫) স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সোন্দাহ বাজারের টাওয়ার মার্কেট এলাকায় এক দোকানে সকাল ১১টা থেকে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ধরে সালিশ বৈঠক বসে। সালিশে অভিযোগ তোলা হয়, সুশান্ত চন্দ্র দাসের সঙ্গে দুই সন্তানের এক নারীর পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। ফোনকলের অডিও শোনার পর ওই নারীর স্বামী সালিশে তাকে তালাক দেন। এরপর উত্তেজিত জনতা সুশান্তের গলায় জুতার মালা পরিয়ে গ্রামজুড়ে ঘোরায় এবং বিকেল ৪টার দিকে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
সুশান্ত চন্দ্র দাস গণমাধ্যমকে জানান, ‘‘ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। আমি তাদের বাসায় যেতাম। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো খারাপ সম্পর্ক ছিল না। তবু আমাকে ধরে নিয়ে সালিশ বসানো হয় এবং ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় এবং আমাকে লাঞ্ছিত করে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ঘটনার সময় আমার বাড়িতে পূজা চলছিল। তাই প্রশাসনের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করতে পারিনি। এখন আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’’
এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা দাবি করেছেন, সুশান্তের বিরুদ্ধে এর আগেও এমন আচরণের অভিযোগ উঠেছিল। তবে এবার ফোন রেকর্ড সামনে আসায় জনতা আরও ক্ষুব্ধ হয়।
সালিশে উপস্থিত মাতব্বর আবু তালহা রাসেল দাবি করেন, ‘‘আইন হাতে তুলে নেয়া হয়নি। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, তাকে জনতার রোষ থেকে রক্ষা করতে গলায় জুতার মালা পরানো হয়, যেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।’’ ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট নারী ও তার সাবেক স্বামী কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম খোকন বলেন, ‘‘আমি বাইরে ছিলাম। শুনেছি স্থানীয় কয়েকজন গ্রাম পুলিশকে আটক করা হয়েছিল। আমি তখনই বলেছিলাম, পুলিশের হাতে তুলে দিতে। আইন নিজের হাতে নেয়া ঠিক হয়নি।’’
এদিকে, কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ জানান, এখনো কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, ‘‘ঘটনার ভিডিও আমি নিজেও দেখেছি। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও জনসাধারণের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া ও জনতার ‘শাস্তি কার্যকরণ’ কি ন্যায়বিচারের মানদণ্ডে পড়ে—সেই প্রশ্ন এখন সমাজজুড়ে।
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News