ডেস্ক রিপোর্টার :

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মওলানা ভাসানী সেতুতে আলো না থাকার কারণে বেপরোয়া গতিতে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে।

রোববার (২৪ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে সেতুর উত্তর পাশে একটি মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হন। আহতরা হলেন হাদিয়া জামান ও মোকছেদুল ইসলাম, উভয়ই সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৪ চন্ডীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সীচা গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তারা গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

স্থানীয়রা জানান, দুই যুবক দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে সেতু পার হচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ একটি ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন এবং মোটরসাইকেল ও অটোভ্যান দুমড়ে-মুচড়ে যায়। আহতদের প্রথমে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাদের গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সেতুর সংযোগ সড়কের কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার দুই থানার মোড় এলাকায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ৮০ বছর বয়সী খদেজা বেগম নিহত হন। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, সেতু চালুর পর থেকেই মোটরসাইকেল চালকরা বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছেন। একদিকে আলোবিহীন সেতু, অন্যদিকে একাধিক আরোহী নিয়ে দ্রুত গতিতে যানবাহন পার হওয়ায় দুর্ঘটনা হচ্ছে।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাকিম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, “ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। বেপরোয়া গতি ও চালকদের অসাবধানতার কারণে দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। এছাড়া সেতুতে আলো না থাকাও দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ।”

ওসি আরও জানান, সেতুর শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে এবং স্থায়ী ক্যাম্পের অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, শিগগিরই সেতুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, মওলানা ভাসানী সেতু উদ্বোধনের মাত্র এক দিন পরেই ল্যাম্পপোস্টে বিদ্যুৎ সরবরাহের তার চুরি হয়ে যাওয়ায় পুরো সেতুটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। এর ফলে যানবাহন ও পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন এবং দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।

স্থানীয়রা দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, শুধুমাত্র সেতুর আলো চালু করলেই নয়, যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ ও সেতুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাই জরুরি।