ডেস্কঃ রিপোর্টার :

মিয়ানমারে গত শুক্রবারে আঘাত হানে ৭.৭ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্প, যার পর মৃতের সংখ্যা এখন ১০,০০০ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১,০০০ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত দুই হাজার মানুষ। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, এটি আঘাত হানে মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের উত্তর-পশ্চিমে। ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার, এবং এর পরপরই ৬.৪ মাত্রার আফটারশক অনুভূত হয়।

এ বিপর্যয় শুধু মিয়ানমারেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ভূমিকম্পের প্রভাব থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, চীন এবং ভিয়েতনামে পর্যন্ত অনুভূত হয়েছে। মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর মান্দালয়, যা ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি ছিল, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে হতাহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এবং ধ্বংসের পরিমাণও ভয়াবহ।

ভূমিকম্পটির তীব্রতা এতটাই ছিল যে, এর প্রভাব ভারত, চীন, কম্বোডিয়া এবং লাওসেও অনুভূত হয়েছে। মিয়ানমারে এখনও উদ্ধারকর্মীরা জীবিতদের খুঁজে বের করতে কাজ করে যাচ্ছেন। কিছু জায়গায়, উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন, যা আরও মানবিক সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য মিয়ানমারের জান্তা সরকার আহ্বান জানালে, বেশ কিছু দেশ সহায়তা পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহায়তা পাঠানোর জন্য প্রস্তুত হয়েছে। ভারত ইতিমধ্যেই ত্রাণ পাঠিয়েছে এবং চীনা উদ্ধারকারী দলও মিয়ানমারে পৌঁছেছে।

থাইল্যান্ডে, একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে প্রায় ১০০ জন নির্মাণ শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন এবং ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, উদ্ধারকর্মীরা এখনো ওই ভবনের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে আটকে পড়াদের খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছেন।

এ ঘটনায় মিয়ানমারে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে এক গভীর সংকট সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে জীবিতদের উদ্ধারের জন্য তীব্র প্রচেষ্টা চলছে। তবে, ভূমিকম্পের ফলে যে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে।