ডেস্ক রিপোর্টার :

দেশে দীর্ঘ সময় কমে আসার পর করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়তে শুরু করেছে। সর্বশেষ একদিনে—বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ে—নতুন করে আরও ৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১৭ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২১৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। তবে আশার কথা, এই সময়ে কোনো নতুন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। ফলে চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৩ জনেই অপরিবর্তিত রয়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ, যেদিন দেশে প্রথমবারের মতো ৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এরপর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম একজনের মৃত্যু হয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।

২০২১ সালে সংক্রমণ পৌঁছায় ভয়াবহ মাত্রায়। বিশেষ করে ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট, এই দুইদিনে প্রতিদিন ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়—যা ছিল করোনাকালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন।

তবে ২০২২ সাল থেকে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যেতে থাকে। টিকাদান, জনসচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি পালনের ফলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার অনেকটা কমে আসে এবং এক পর্যায়ে নতুন শনাক্ত ও মৃত্যু প্রায় শূন্যে নেমে আসে।

চলতি বছরের শুরু থেকে বেশ কয়েক মাস করোনা সংক্রমণ প্রায় অনুপস্থিত ছিল। কিন্তু জুন-জুলাইতে এসে আবার নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। স্বল্পসংখ্যক হলেও প্রতি সপ্তাহেই কিছু নতুন শনাক্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, করোনাভাইরাস একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। এটি মাঝে মাঝে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে মৌসুম পরিবর্তন, জনসমাগম ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষার সময়ে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আরিফুজ্জামান বলেন,

“ভয়ের কিছু নেই, তবে আত্মতুষ্টিও বিপজ্জনক। করোনা এখনো সম্পূর্ণ বিদায় নেয়নি। নিয়মিত নজরদারি ও সতর্কতা দরকার।”

তিনি বলেন,

“মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং অসুস্থ অবস্থায় জনসমাগমে না যাওয়া—এই সাধারণ অভ্যাসগুলো বজায় রাখতে হবে। বিশেষ করে বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের প্রতি বাড়তি যত্ন দরকার।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানাচ্ছে, এখনো প্রতিদিন কিছুসংখ্যক নমুনা পরীক্ষা চালু আছে এবং পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে নতুন করে সংক্রমণ না বাড়ে, সেজন্য সবার উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করানো।