ঝালকাঠিতে অর্ধেকে নেমেছে দিনমজুরের আয়ঃ ছবি সংগৃহীত
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে প্রায় থমকে গেছে নদীবেষ্টিত দখিণের জেলা ঝালকাঠির জনজীবন। পেটের দায়ে প্রতিদিনই ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে এখানকার রিকশা চালক, শ্রমিক ও দিনমজুরদের। বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করলেও অর্ধেকে নেমেছে তাদের রোজগার।
ঝালকাঠি পৌর এলাকায় ৫ হাজারের বেশি মানুষ রিকশা ও ইজিবাইক চালিয়ে পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। বৃষ্টিতে ভিজে হলেও তারা কাজে বের হচ্ছেন কিন্তু সড়কে চলাচলের যাত্রী পাচ্ছেননা। যেখানে আগে প্রতিদিন আয় হতো ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা সেখানে আয় নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। আর যারা ভ্যান গাড়ী, রিকশা ও ইজিবাইক ভাড়ায় নিয়ে চালান তাদের অবস্থা আরও দুর্বিষহ।
ঝালকাঠি পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা মেলে ভ্রাম্যমান হকারদের সাথে। তারা সড়কের পাশে ভ্যান গাড়িতে শাক-সবজি, দেশীয় ফল, জামা কাপড়, প্লাষ্টিক সামগ্রীসহ নানা জিনিসপত্র সাজিয়ে বিক্রি করেন। অনেকে গ্রাম থেকে টাটকা কৃষি পণ্য এনে ছোট্ট ঝুড়িতে মাথায় নিয়ে ঘুরে ঘুরে তা বিক্রি করেন।
টানা বৃষ্টির কারণে লাভবান হওয়া তো দূরের কথা মূল খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
রিকশাচালক বাবুল মিয়া বলেন, 'বর্ষার কারণে লোকজন রাস্তায় বের হয় না। আগে যে ইনকাম হতো তার তিন ভাগের এক ভাগও এখন হয় না। তবুও পরিবারের কথা চিন্তা করে বৃষ্টিতে ভিজে হলেও রাস্তায় নামতে হয়।'
আরেক রিকশাচালক আব্দুর রহমান বলেন, 'বৃষ্টি আমদের আয় কমিয়ে দিয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিতেও রিকশাচালাতে বের হতেই হয়। কারণ পেটের দায়েই রাস্তায় নামতে হয় উপার্জনের জন্য। বর্ষায় তো ভিজেই গাড়ি চালাই কিন্তু যাত্রী নানা থাকায় সাড়াদিনে ৩শো টাকা আয় হয়না।
দৈনিক রোজগার করে খাওয়া শাহাবুদ্দিন ব্যপারী বলেন, 'গ্রাম থেকে কাঁচামাল ও কিছু ডিম নিয়ে আসছি। সাড়াদিন টানা বৃষ্টিতে ঠিকমতো বিক্রি করতে পারি নাই। লোকজন ঘর থেকে বের হয়না। লাভতো দুরের কথা, ব্যবসার মূলধন উঠবেনা।'
ইমারত নির্মান শ্রমিক মকবুল মৃধা বলেন, 'টানা বৃষ্টির কারনে গত ৪দিন ধরে মালিক কাজ বন্ধ রেখেছে। বিকল্প কাজ পাইনা। তাই ব্যটারীচালিত রিকশা নিয়ে আজ রাস্তায় নেমেছি। বিকেল পর্যন্ত দেরশো টাকা আয় করেছি এখনো গাড়ির ভাড়া উঠেনাই।'
অপরদিকে অতিবৃষ্টির কারনে যাত্রী সংকট হওয়ায় ঝালকাঠি থেকে দু'দিন ধরে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি কোনো লঞ্চ। এতে করে বেকার সময় কাটাচ্ছে লঞ্চঘাটের শ্রমিকরা তারা বলছেন, 'লঞ্চ না চললে আমরা পুরোপুরি বেকার হয়ে যাই। হকার, দিনমজুর, রিকশা চালকরাতো অন্যন্য সময়ে তুলনায় কম আয় করে। আমরা যারা ঘাটে কুলির কাজ করি লঞ্চ বন্ধের কারনে আমাদের আয় সম্পুর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
সামাজিক সেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা বলছেন, পানিতে বিভিন্ন এলাকা থৈ থৈ করছে। যার কারণে শ্রমজীবী মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে ভুগছে। তাদের সহযোগিতা করা একান্ত প্রয়োজন। এই মুহূর্তে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ানোর ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।'
ঝালকাঠি জেলাজুড়ে ভারী বৃষ্টিতে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল, নিম্নাঞ্চলজুড়ে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি। গ্রামের বেশ কিছু এলাকায়ও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ফলে অনেক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বরিশালসহ দেশের চারটি বিভাগে আরো কয়েকদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার (৯ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News