ভারতীয় হুন্ডি ব্যবসার প্রভাব কমে, বৈধ চ্যানেলে বেড়েছে প্রবাসী আয়ঃ ছবি সংগ্রহীত
বিগত বছরগুলোর তুলনায় প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ার একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসেই প্রবাসীরা প্রায় সাড়ে ২১ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যা গত অর্থবছরের পুরো ১২ মাসের প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সের কাছাকাছি। ব্যাংকগুলো বলছে, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ফলে এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে,
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ হলো ভারতীয় হুন্ডি ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম সংকুচিত হওয়া। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলের ব্যবহার বাড়ছে, এবং এটি মূলত রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলার পরিবর্তনের ফলস্বরূপ হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আগস্টের পর, দেশের পট পরিবর্তনের পর থেকে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে।
বিশেষত, গত মার্চে দেশে এসেছে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। এ সময় রেমিট্যান্স প্রবাহের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা স্পষ্টভাবে লক্ষণীয়,
এদিকে, ব্যাংকগুলো জানিয়েছে, বিগত সময়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রকাশে কিছুটা বিভ্রান্তি ছিল। তবে এখন সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায়, রেমিট্যান্সের পরিসংখ্যান সঠিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপক মো. আবুল বাসার বলেন, "বর্তমানে রেমিট্যান্স পাঠানোর পর তা সঠিকভাবে হিসাব করা হচ্ছে, ফলে পরিসংখ্যানও সঠিকভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।"
এটি একটি বড় পরিবর্তন, কারণ পূর্বে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের দ্বারা বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বাজারে প্রভাব ছিল ব্যাপক। তাদের কার্যক্রম অনেকাংশেই অবৈধ ছিল এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে তারা কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছিল। তবে বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের তিক্ততায় হুন্ডি ব্যবসায়ীরা সংকুচিত হয়ে গেছে, যার কারণে প্রবাসীরা বাধ্য হয়ে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করছেন।
অর্থনীতিবিদ ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, "বাংলাদেশে হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকারী ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বর্তমানে কিছুটা গুটিয়ে ফেলেছে। তাদের নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়ায় প্রবাসীরা এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে টাকা পাঠাচ্ছেন।"
অন্যদিকে, এমআরএ (মাল্টি-ন্যাশনাল রেমিট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন) এর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, "বাণিজ্য খাতে যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ এবং প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে আরো প্রবাসী আয় বৈধ চ্যানেলে আনা সম্ভব হবে।"
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে প্রবাসী আয় এসেছে সাড়ে ২১ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলারের কাছে পৌঁছেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, যদি হুন্ডি ব্যবসা আরও নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং প্রবাসীদের অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, তবে এই প্রবৃদ্ধি আরো বাড়বে।
বর্তমানে প্রবাসী আয় বাড়ানোর পাশাপাশি বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোতে প্রবাসীরা আগ্রহী হচ্ছেন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত।
পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, মদিনা মেডিকেল, ০৯ তালা।
সম্পাদক ও প্রকাশক
হুমায়ুন কবির সাগর
পরিচালক
মাহবুব আলম সৈকত
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: searchbdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৭৫২১১১১৭
Email: ads@searchbdnews.com
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || Serach BD News