ডেস্কঃ রিপোর্টার :

বিনোদন নয়, প্রতিবেশী দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এবার সরব হলেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য ভারতের শুভকামনা কেবল কূটনৈতিক নয়, বরং এটি ভারতের “ডিএনএ-তে” রয়েছে। পাশাপাশি তিনি আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে খুব শিগগিরই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘রাইজিং ইন্ডিয়া সামিট ২০২৫’-এর দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জয়শঙ্কর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট জানিয়েছে, সেখানে তিনি বলেন, “ভারতের চেয়ে অন্য কোনও দেশ বাংলাদেশের জন্য এতটা মঙ্গল চায় না।”

জয়শঙ্কর তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে জানান, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্বেগ রয়েছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে যে বার্তা আসছে, তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। মৌলবাদী প্রবণতা ও সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা—এই বিষয়গুলো ভারতের নজরে রয়েছে এবং এসব নিয়ে আমরা খুব খোলামেলা অবস্থানে আছি।”

তিনি আরও বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক শুধুই কূটনৈতিক নয়, এটি মূলত “জনগণের সাথে জনগণের সংযোগ”। এটি এতটাই ঘনিষ্ঠ ও স্বতঃস্ফূর্ত যে, অন্য কোনও সম্পর্কের সাথে এর তুলনা চলে না বলে মন্তব্য করেন জয়শঙ্কর।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, “গণতন্ত্রের মৌলিক ভিত্তি হলো নির্বাচন। ম্যান্ডেট প্রদানের মাধ্যমেই জনগণ তাদের মতামত জানায়, এবং এভাবেই একটি দেশের নেতৃত্ব নির্ধারিত হয়। আমরা আশা করি বাংলাদেশ সেই পথেই এগোবে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, তারা শিগগিরই নির্বাচন আয়োজন করবে এবং জনগণের রায়কে সম্মান জানাবে।”

এই বক্তব্য এমন এক সময় এলো, যখন মাত্র কয়েকদিন আগেই থাইল্যান্ডে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

জয়শঙ্কর সেই বৈঠক প্রসঙ্গে বলেন, “সেই আলোচনায় মূল বার্তাটি ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করা। আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে, এবং সেটির ভিত্তি জনগণের মাঝে গভীর সংযোগ।”

ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যে স্পষ্ট যে, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতিতে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। আর ভারতের দৃষ্টিতে, প্রতিবেশী এই রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র ও শান্তি বজায় থাকাটাই মুখ্য বিষয়।