ডেস্কঃ রিপোর্টার :

আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ছবিটিতে দাবি করা হয়, সরকার পতনের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়া ওবায়দুল কাদেরকে নয়াদিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে দেখা গেছে। যদিও এই দাবির বাস্তবভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ছবিতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি মুখ ঢেকে হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এবং ক্যাপশনে বলা হয়েছে—সাংবাদিকের ক্যামেরা দেখে তিনি মুখ ঢেকে নেন। এতে আরও দাবি করা হয়, এই ব্যক্তি ওবায়দুল কাদের, যিনি এখন ভারতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তবে ছবিটির যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দিয়ে তৈরি। বিশেষায়িত চেকিং টুল “Is It AI” ব্যবহার করে বিশ্লেষণ চালানো হলে ছবিটির ৯৪ শতাংশ সম্ভাবনায় এআই-জেনারেটেড হিসেবে চিহ্নিত হয়।

ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায়, এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ালেও কোথাও কোনো নির্ভরযোগ্য উৎস বা সংবাদমাধ্যমের রেফারেন্স নেই। ওবায়দুল কাদেরের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

ছবিটির পেছনে থাকা তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, এটি সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন এবং জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে তৈরি ও প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। সেই সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এর পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে।

সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিখোঁজ হন, কেউ কেউ আত্মগোপনে আছেন, আবার অনেকে দেশের বাইরে চলে গেছেন বলেও দাবি উঠে। এই প্রেক্ষাপটে ওবায়দুল কাদেরকে ঘিরে এমন একটি ছবি ভাইরাল হওয়ায় জনমনে আগ্রহ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।

তবে যাচাই-বাছাই শেষে বলা যায়—ছবিটি বাস্তব নয়, বরং ডিজিটালি তৈরি একটি ভুয়া চিত্র। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর ছবি ও তথ্য ছড়িয়ে জনমনে মিথ্যা ধারণা তৈরি করা হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্যও হুমকিস্বরূপ।

গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি ভুয়া ছবি ও তথ্য দিনদিন বাড়ছে। এ কারণে সাধারণ পাঠকেরও উচিত তথ্য যাচাই ছাড়া কোনো কিছু বিশ্বাস না করা ও যাচাইযোগ্য সূত্র ছাড়া শেয়ার না করা।