ডেস্ক রিপোর্টার :

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম খালাস পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, “আলহামদুলিল্লাহ, সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ স্ট্যাটাস ঘিরে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনার ঢেউ।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। তাতে পূর্ববর্তী মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দেন আদালত।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেন। অভিযোগ ছিল, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ ছয়টি ঘটনায় নয় ধরনের অপরাধ সংঘটনের।

পরবর্তীতে ২০১৫ সালে আপিল করেন আজহার। আপিল বিভাগ ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর তিনটি অভিযোগে ফাঁসির রায় বহাল রাখে এবং একটি অভিযোগে খালাস দেন। এরপর তিনি রিভিউ আবেদন করেন।

২০২4 সালে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৩ পৃষ্ঠার একটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন আজহার, যেখানে ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ আদালত পুনরায় আপিল শুনানির অনুমতি দেয়।

এর ফলেই এবার খালাস পেলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম।

রায়ের পর জামায়াত নেতারা এই রায়কে “বিচার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত” হিসেবে উল্লেখ করছেন, অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার থাকা মহলগুলো এ রায়ে বিস্মিত ও হতাশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে এটাই প্রথম মামলা, যেখানে রিভিউ শেষে পুনরায় আপিল শুনানি হয়ে খালাসের রায় এসেছে। ফলে বিষয়টি বিচারিক ইতিহাসেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

ডা. শফিকুর রহমানের স্ট্যাটাস রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে কি না, সে নিয়েও জোর আলোচনা চলছে।